Labels

'' রোদ-জ্বলা দুপুরে,সুর তোলে নূপুরে তুমি যবে বাস থেকে নাবতে, একটা কিশোর ছেলে একা কেনো দাড়িয়ে সে কথা কি কোনোদিনও ভাবতে? ''... এ গান শুনার দিন শেষ হলো ! কেনো শেষ হলো ...জানত ( ''ভালো থাকুক প্রথম প্রেম'' ) গল্পটি পড়ুন : A R Mridul

Thursday, January 24, 2019

ভালো থাকুক প্রথম প্রেম


Jaan Nisaar Hain,Jaan Nissar..
মনে আছে তোমার-আমার 1st দেখা হওয়ার দিনটি ?
মনে আছে আমার গাওয়া সে গানটা?
প্রেম কি তা তো তুমিই আমাকে শিখিয়েছিলে,তবে কেনো ভূলে আছো আমার সে প্রথম প্রেম?
নাকি এখনও ক্ষনিকের জন্যও মনে পড়ে কলেজের রাস্তায় আমার পিছু লাগা ।হয়ত ভূলে গেছোো সেই বিষাদগ্রস্থ অতীত। আমি কেনো ভূলতে পারিনি?
 প্রতিদিনের মতো রাস্তায় দাড়িয়েছিলাম টিফিন আর বইভর্তি ব্যাগ কাধে নিয়ে। তুমি বলেছিলে তুমিই প্রথম আমায় দেখেছিলে ।আমি তখন গতির ৩য় সমীকরণ নিয়ে ব্যস্ত। বান্ধবীর কাছ থেকে যখন জানলে আমি আমার স্কুলের সবচেয়ে ভালো ছাত্র তখন হঠাত্ই তোমার মুখে আমার নাম শুনি ।আমার সরণ,ত্বরণ ও গতিকালের সম্পর্কটা তখন আর মেলানো হয়নি। রুটিনমাফিক জীবন ভালোবাসতাম। কিন্তু সেদিন থেকে রুটিনের বদল হয়েছিলো। প্রথমবারের মতো কোনো মেয়ের দিকে গভীরভাবে তাকিয়েছিলাম কিছুসময়।তারপর তুমি চলে গেলে বাসে করে। আমার আর যাওয়া হয়নি সেদিন স্কুলে। বাসায় এসে মিথ্যে বললাম। তখনও কানে সুর তুলছিলো তোমার নূপুরের ধ্বনি। স্কুল ফাকি দিয়েছিলাম টানা কদিন। খবরটা রাস্ট্র হয়ে গেলো। মা শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন কোনো সমস্যা নাকি,বিশ্বাস ছিলো আমার প্রতি তাই আর কিছু বলেননি।
'রোদ-জ্বলা দুপুরে,সুর তোলে নূপুরে
তুমি যবে বাস থেকে নাবতে,
একটা কিশোর ছেলে একা কেনো দাড়িয়ে
সে কথা কি কোনোদিনও ভাবতে?
vidmate থেকে গানটা ডাউনলোড করে ফোন শাটডাউন না হওয়া পর্যন্ত একটানা শুনতাম। কিন্তু এ গান শুনার দিন শেষ হলো। মেয়েদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদাভাবে সৃষ্টি করা এক বৈশিষ্টের কারণে কিছুটা কৌতুহূলী হলে। তুমি আর তোমার বান্ধবী যখন কথা বলা শুরু করলে আমি আর কিছু বলতে পারিনি। শুধু চেয়ে দেখেছি তোমার কপালে হঠাত্ এসে পড়া চুল আর কানের দুলগুলো। ৬ মাস এভাবেই কেটেছে। কখনোবা রাস্তায় দাড়িয়ে কখনোবা তোমার বাসার সামনে বৃষ্টিতে ভিজে।
SSC পরীক্ষার পর কলেজে ভর্তি হই। অরিয়েন্টেশন ক্লাসে আবার তোমার দেখা পাই। পাশাপাশি বামে থাকা ১ বেঞ্চ সামনে বসে আছো তুমি। সিনিওর ভাইদের আমায় দেওয়া রজনীগন্ধার সব ফুলই তোমার মাথায় আর হাতে ছুড়ে মেরেছি। তুমি কিছুটা বিরক্ত হলে। অনেক ফ্রেন্ডই স্কুল থেকে জানতো আমি তোমার প্রেমে পড়েছি। কলেজে এক ফ্রেন্ড অনেকটা জোর করেই তোমার বান্ধবীর সাথে কথা বলে তোমার সাথে আমার দেখা করায়। অনেক কিছু শিখিয়ে বলেছিলো ভালো করে কথা বলতে। এর আগেও তোমার কথা বলতে পারিনি। তাই সেদিন কিছু চিন্তা না করেই I LOVE YOU বলে দিই। তুমি আবার চলে গেলে কিছু না বলে। আমার ফ্রেন্ডটা রেগে fire হয়ে গিয়েছিলো। কলেজের প্রতিটা ক্লাসে তোমার পাশের বেঞ্চে বসে তাকিয়ে থাকতাম তোমার দিকে। স্যারেরা তোমার মতোই ব্যাপারটা আচ করে রাগ করলো। ভালো ছাত্র জানতো কিন্তু এটাও জেনে গিয়েছিলো কলেজের পরীক্ষায় ফেল করবো। পরীক্ষায় আমি 1st হলাম,তুমি খারাপ রেজাল্ট করে প্রায় কেদেই ফেললে। কলেজে আসোনি কদিন। সব মেয়েদের মতো তুমিও ক্যারিয়ারের প্রতি যত্নবান ছিলে। কথা বলতে চেয়েছিলাম help করবো বলে,তুমি অন্য কিছু ভাবলে।
পরের পরীক্ষায় attend করিনি,রুমের বাইরে দাড়িয়ে জান্লার ফাক দিয়ে তোমায় দেখতাম। পরীক্ষার পর আমি ফেল করি আর তুমি 1st । সবই বুঝতে পারলে। এখন তুমি কথা বলতে চাইলেও আমি বলিনি। Test পরীক্ষার আগের দিন তুমি কিছু বলতে চাইলে,কিছু বলোনি পূজোর নিমন্ত্রণ দিয়েছিলে। গিয়েছিলামও।
 আকাশের দিকে তাকিয়েছিলাম ধোয়াশাভরা দিগন্তের দিকে। তুমি আসলে একলা এক কক্ষে। ফ্রেন্ড হওয়ার কথা বললে। এতটাই খারাপ লাগলো যে আমার সমস্ত আমিত্ব ভেঙ্গে তোমায় propose করলাম। বাঁ হাতটা দিয়ে রক্ত ঝরছে আর ডান হাতে রক্ত দিয়ে তোমার লিখা একটুকরো কাগজ দেখে তুমি অজ্ঞান হলে।
শপথ করেছিলাম আর তোমায় ডিস্ট্রাব করবো না।
বিদায়ী অনুষ্টানে তুমি আমার পথরোধ করলে। ডায়েরীর ১টা ভাঁজ করা পাতা দিয়ে হুট করে চলে গেলে। সত্যিই আমি আর চলতে পারলাম না। আবার সেখান থেকেই নতুন করে পথ চলা শুরু। বাসায় এসে পাতায় লেখা নাম্বারে কল করলাম। মেসেজ এলো। __আসতে হবে। পরেরদিন আসলাম,একটা লম্বা কাগজ দিলে। সারারাত জেগে পড়লাম। সত্যিই কাগজের লেখাগুলো ঠিক?
তুমি কি সেদিন থেকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলে,যেদিন আমি তোমার জন্য সবার সামনে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান ধরেছিলাম। পরদিন মাকে এনে কলেজে আসতে হয়েছিলো। তাহলে কি সেদিন,যেদিন তুমি তেলে নিমজ্জিত আমার ভদ্রমাথা দেখে বলেছিলে একটু স্মার্ট হতে পারোনা?
 ভাবতে পারিনি তুমি এতোটা ভালোবাসবে। ভাবতে পারিনি মেয়েরা ভালোবাসতে পারে। আমার পারিবারিক অবস্থা কেমন করে জেনে নিলে। একসাথে ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। বিদেশ গিয়ে তোমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছেড়ে দিলে। ভালোই কাটছিলো দিনগুলো।
ভার্সিটির শেষদিকে তুমি আমার থেকে দূরে সরে যেতে লাগলে। মনে হতো তুমি আর আগের মতো আমায় ভালোবাসো না। যেখানে আমি তোমার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল,আমায় স্বাবলম্বী হতে বললে। জানতে পারলাম একটা ছেলে তোমায় পছন্দ করে। তুমিও হয়তো।
...সোমবার দেখা হওয়ার কথা ছিলো,তুমি আসলে না। ফোন বন্ধ ছিলো। বাসায়ও পাইনি। ১৮ দিন পর জানলাম তোমরা সপরিবারে ঢাকায় চলে গেছো। সেখানে সেই ছেলেটাকে বিয়েও করেছো। ভূল ভাঙ্গলো,তোমার-আমার রাস্তা তো এক হওয়ার কথা না।
৩ মাস পর হঠাত্ তোমার বান্ধবী তোমার ডায়েরীটা আমায় দিয়েছিলো সাথে একট হাতঘড়িও। না ডায়েরীটা দিতে বলোনি,ওটা তুমি ভূলে বাড়িতে ফেলে গিয়েছিলে।
সত্যিই আমাকে ভালোবাসতে অনেক। হার্ট অ্যাটাক আর মাইনর স্ট্রোক করা বাবার জন্য তুমি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলে। বলোনি,বলতে চাওনি। ডায়েরীর ধূলোজমা পাতায় লিখা ছিলো সে না বলা কথা।
 তোমার মতোই একজন চেয়েছিলাম সৃষ্টিকর্তার কাছে আর তোমাকেই পেয়েছিলাম।তবে কেনো পেয়ে হারাবার ব্যাথা দিলে?
জানি দোষটা তোমার না। তুমি তো আমার ভাগ্যেই ছিলেনা।
জানিস,সেদিন থেকে কতো খুঁজেছি তোকে। প্রত্যেক বইমেলায়,বিকেলে প্রত্যেকটা নদীর পাড়ে,আমার সমস্ত অস্তিত্ত্বে। কিন্তু পাইনি।
 তুই হারিয়ে গিয়েছিস অজানায়,হারিয়ে যাওয়া সময়ের মতো। কত রাত জেগেছি তোর কথা ভেবে। কলেজের গাওয়া গানটা হিট হয়নি ইউটিউবে। সেটা তো তোর প্রিয় ছিলো। শুনেছিস কখনো এ গানটা? আজ আমি ছোটোখাটো কবি তোর পরিচিত সেই গল্পে। কখনো কি খুঁজে পেয়েছিস আমায় সেই গল্পের মাঝে?
হুম,আমি আজ উচ্চবিত্ত হতে পেরেছি। তোর বাবার মতো ব্যাবসা শুরু করেছি ক-বছর আগেই চাকরির সুবাদে। সবই পেয়েছি। পাইনি শুধু তোকে।
 বাঙ্গলার পরিচিত ধূলোময় রাস্তায় একফোঁটা নুনাজল পড়লো। সামান্য ধূলিকণা ভিজেছে সে জলে অস্ফূট চোখে দেখলাম আবার তুমি চলে যাচ্ছো।
সেই প্রথম দিনের মতোই,আমিও দাড়িয়ে আছি রা্স্তায় সেদিনের মতোই,শুধু কাধের সে ব্যাগ নেই।
 রাস্তার সে মোড় নয়।
ভালোবাসা ঠিকই আছে,সে আগের মতোই।
তুইও আর তোর খোপার গাদা ফুলও।
 শুধু তোর-আমার ঠিকানা পাল্টে গেছে।
সময় বদলে গেছে।
 ভালোলাগা তোর কপালের সেই চুলটা পেকে গেছে।
তবুও ভালোবাসি,তুমি কি ভালোবাসোনা?
চলে গেলে,আবার আমি হাঁটছি_কাছে আসা কেনো হলো না ...?

  ## Like My Page [ ARM ]   

No comments:

Post a Comment